নিজস্ব প্রতিনিধি।
বাংলাদেশের উপকূলীয় নদ-নদীতে চায়না দুয়ারি জালসহ ক্ষতিকর বিদেশি মাছ ধরার জাল নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এগ্রোইকোলজি ফান্ড ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের সহযোগিতায় গ্রিন কোয়ালিশন ও শ্যামনগরের সম্মিলিত যুব সংগঠন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, কৃষক, পরিবেশ কর্মী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও যুবরা অংশ নিয়ে ‘চায়না দুয়ারি জাল বন্ধ করো’, ‘জলজ সম্পদ বাঁচাও, জেলের জীবন রক্ষা করো’, ‘দেশীয় মাছের বিলুপ্তি রোধ করো’ প্রভৃতি স্লোগান সংবলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন।
এসময় বক্তারা বলেন, চায়না দুয়ারি জাল অত্যন্ত সূক্ষ্ম ফাঁসযুক্ত হওয়ায় এতে মাছের পোনা থেকে শুরু করে ব্যাঙ, শামুক, ঝিনুকসহ প্রায় সব ধরনের জলজ প্রাণী আটকা পড়ে। যা মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। এছাড়া মাছের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হয়। দেশীয় প্রজাতি বিলুপ্তি ঘটাচ্ছে। ক্ষুদ্র জেলেরা জীবিকা হারাচ্ছে। শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলার নদী, খাল ও বিলগুলোতে এই জালের অবাধ ব্যবহার জলজ পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে। তাই দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বক্তারা অবিলম্বে সুন্দরবন ও উপকূলীয় অঞ্চলে চায়না দুয়ারি জালসহ সব ক্ষতিকর বিদেশি জাল আমদানি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, অবৈধ জাল বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের বিকল্প জীবিকা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
শ্যামনগর উপজেলা গ্রিন কোয়ালিশনের সদস্য শেখ আফজালুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সামিউল মনির, ঈশ্বরীপুর ইউপি সদস্য বীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, শ্যামনগর পৌর গ্রিন কোয়ালিশনের সম্পাদক কিরন শঙ্কর চ্যাটার্জী, জেলেখালীর কৃষক নেতা দেবীরঞ্জন মন্ডল, কৈখালী আইসিএম কৃষক সংগঠনের সভাপতি হাবিবুর রহমান, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন গ্রীন কোয়ালিশনের সভাপতি ডা. যোগেশ মন্ডল, সোনামুুগারী জেলে কল্যাণ সমিতির সভাপতি গঙ্গারাম ধীবর, সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিমের সভাপতি সাইদুল ইসলাম, কৃষাণী কোহিনুর বেগম, উন্নয়নকর্মী গাজী আল ইমরান, সুন্দরবন প্রেসক্লাবের সভাপতি বেলাল হোসেন, অনলাইন নিউজ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান, বারসিক এর (ভারপ্রাপ্ত) আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে অংশগ্রহণকারীরা শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে মৎস্য উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন।