1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
শালিখার বাউল সাধক,শিল্পী ও গবেষক শাহ লতিফ আফি আনহু - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

শালিখার বাউল সাধক,শিল্পী ও গবেষক শাহ লতিফ আফি আনহু

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৭৪ জন খবরটি পড়েছেন
শাহ লতিফ আফি আনহু-বিডিটেলিগ্রাফ

।। লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডল।।
শালিখার এক মরমী বাউল সাধক সোনার মানুষ শাহ লতিফ আফি আনহু শিল্পী ও গবেষক হিসাবে সারা দেশের মানুষের মনে স্মরনীয় ও বরনীয় হয়ে রয়েছেন। বাংলাদেশের মানচিত্রে ৮৬ হাজার গ্রামের মধ্যে ১ টি গ্রামের নাম হরিশপুর। বৃহত্তর যশোরের মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের অর্ন্তগত এ গ্রামটি। চিত্রা নদীর উত্তর পাড়ের এ গ্রামটিতেই জন্মেছিলেন এই সোনার মানুষ শাহ লতিফ আফি আনহু। এই মানুষটি ছিলেন আধ্যাত্মিক সাধনায় “আমি“র সন্ধানে ব্যাপৃত একজন জ্ঞানতাপস।

সৃষ্টির ইতিহাসে বিবর্তনের ধারায় অমরত্বের আসন পেয়েছেন যেমন ফকির লালন শাহ। আর এই স্মরনীয় ব্যক্তির স্মৃতির পাদদেশে বসে যে সকল জ্ঞানতাপস আধ্যাত্মিক সাধনায় উত্তীর্ন হয়েছিলেন তাদেরই একজন এই মরমী বাউল সাধক কবি ও শিল্পী শাহ লতিফ আফি আনহু। বাউল সম্রাট লালন গবেষনায় তার অবদান অসামান্য।

“৫২“এর ভাষা আন্দোলনে তিনি এলাকার মানুষকে সংগঠিত করে গনজাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন। জাতীয় গবেষনার ক্ষেত্রে লুপ্তপ্রায় শিল্পের সংগ্রাহক হিসাবে তিনি শ্রম মেধা দিয়েছিলেন প্রচুর। অজস্র গানের স্রষ্টা শিল্পী ও গীকিকার হিসাবে বর্তমান সমাজে মাথার মুকুট হয়ে আছেন তিনি। সব মিলিয়ে এই অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী কৃষকবন্ধু মরমী বাউল কবি শাহ লতিফ আফি আনহু সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে মৃত্যুর পরেও সোনার মানুষ হয়ে আছেন।

‘৭১‘ এর স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় দেশের আপামর জনসাধারণের উপর পাকিস্তানীরা যখন অত্যাচার শুরু করে তখন তিনি পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে গেয়ে উঠেন-“আমরা শপথ করি সবাই মিলে /আজ যদি মরিতেই হয় /রক্তের বিনিময়ে রক্ত নেব/আর কত দেখাবিরে ভয়।…‘
সমাজতন্ত্রের অমোঘ পূজারী এই কবি বলতেন ‘মানুষকে হত্যা করে কোনদিন শান্তি স্থাপন হতে পারে না।‘ তাই হত্যার রাজনীতি বর্জন করে প্রেম ভালবাসা দিয়ে তিনি মানুষকে জয়ের কথা বলতেন।‘৭১‘ এর সময় দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে নকশালী আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এই নকশালী আন্দোলনের সময় তিনি গনহত্যার বিরোধীতা করতে লাগলেন। ওই সময় তিনি হত্যার বিরুদ্ধে গাইতে লাগলেন ‘মানুষ মেরে মানুষের জন্য সমাজতন্ত্র, ও তন্ত্র ভেজাল তন্ত্র ও নয় গনতন্ত্র ও তন্ত্র ধবংসতন্ত্র ও নয় মুক্তি তন্ত্র।‘ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন সময়ের মাঝামাঝি তিনি ভারতে চলে যান। সেখানে স্বল্প সময়ে অবস্থানকালে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র‘ এবং ‘আকাশ বাণী বেতার কেন্দ্রে ‘দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে সংগ্রামী মানুষের মনে উৎসাহ অনুপ্রেরনার সৃষ্টি করেছিলেন।

৭১ এর ১৬ই মে তিনি আকাশ বাণীতে গাইলেন-‘আমি তোমায় বড় ভালবাসি সোনার বাংলারে- আমি তোমায় বড় ভালবাসি/আমার আবার যদি হয়গো জনমরে/যেন ফিরে তোমার কোলে আসি/সোনার বাংলারে আমি তোমায় বড় ভালবাসি/ৃৃ..। মুক্তিযোদ্ধাদের পথ নির্দেশক হিসাবে তিনি কাজ করতে থাকেন। সংগ্রামের মধ্যেই তিনি ফিরে আসেন নিজের জন্মভ’মিতে। দেশের ভিতর তখন্ধসঢ়;ও গনহত্যা চলছে। এই গনহত্যার বিরোধীতা করতে গিয়েই চিহ্নিত দুস্কৃতিকারীদের হাতে তিনি নিহত হয়েছিলেন।

১৩৭৮ সনের ৫ই আষাঢ়,১৯৭১ সালের ২০শে জুন শনিবার তখন গোধুলীলগ্ন। এসময় কবি অবস্থান করছিলেন বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়ীয়া বাজারস্থ তার নিজস্ব হোমিয় ও প্রাকৃতিক চিকিৎসাকেন্দ্রে। ওইদিন স্থানীয় হাটের দিন ছিল। শত শত মানুষের ভীড়ে গুটি কয়েক চিহ্নিত সন্ত্রাসী তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। মুহুর্তে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সর্বগুনের সমন্বয়ে অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই মরমী বাউল সাধক কবি ও শিল্পী শাহ লতিফ আফি আনহু মাত্র ৪৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছিলেন।

এই মরমী বাউল সাধক কবি ও শিল্পী শাহ লতিফ আফি আনহু হরিশপুর গ্রামের এক দরিদ্র পীড়িত সংসারে জন্মেছিলেন। পিতার নাম নাছের উদ্দিন বিশ্বাস। মাতা ছিলেন জরিনা বেগম। বাংলা ১৩৩৬ সনের ৫ই আষাঢ় কবির জন্ম হয়েছিল। চিত্রা নদীর বাঁকে ছোট্ট একটা বাড়ি নাছের উদ্দিনের। ওই সময় ওই বাড়িতে একজন মহৎপ্রাণ ব্যক্তির আর্বিভাব হয়েছিল। তিনি ভবিষ্যত বানী করে বলেছিলেন- মা জরিনার গর্ভে একজন মহৎ জীবনের আগমন হবে। তার বাণী বাস্তবে রুপান্তরের পর সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি অন্তর্ধান হয়েছিলেন বলে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। কবির জন্ম ও মৃত্যু ৫ই আষাঢ় একইদিন হওয়াই সেই অজ্ঞাত মহৎপ্রাণ ব্যক্তির ভবিষ্যত বানী মানুষের মনে খুবই দাগ কাটে।

প্রথম জীবনে লতিফ শাহ গ্রামের পাঠশালা অতিক্রম করে মাগুরার সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি যশোর পদ্মবিলা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছেন। পরবর্তীতে কলকাতার বসির হাট জান মামুদ হাইস্কুল ও কলেজে পড়াশোনা করেন। ঐ সময় তিনি কলকাতা থেকে ডিএইচএমএস পাশ করে দেশে ফিরে আসেন। ৫ বছর কলকাতায় অবস্থানের সময় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তিনি প্রাকৃতিক চিকিৎসার বিষয়ে গবেষনা মুলক প্রবন্ধ লিখে প্রচুর খ্যাতি অর্জন করেন।

দেশে ফিরে তিনি প্রথমে সীমাখালীতে, পরে নারিকেল বাড়ীয়াতে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন। ৫২-এর ভাষা আন্দোলনেও শাহ লতিফ আফি আনহুর অবদান ছিল যথেষ্ট। এলাকার কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষকে সংগঠিত করে তিনি বিভিন্নঅনুষ্ঠানে গাইতেন-‘সে যে আমার বাংলা ভাষা, আমার মায়ের ভাষা/ বিদেশী কি তার মর্ম জানে/ৃৃৃ.. আমার প্রাণে প্রাণে/ৃ.. । মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে তিনি যশোর মাগুরা অঞ্চলের কৃষকদের সংগঠিত করে কৃষক সমিতি গড়ে তুলেছিলেন। তাদের সুখ দুঃখের সাথী হয়ে কৃষকদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ ভুমিকা পালন করতে থাকেন। কৃষক মুক্তি আন্দোলনের বিশেষ ভুমিকায় তিনি কৃষকদের পরম বন্ধু রুপে পরিগনিত হয়ে উঠেছিলেন।

বিভিন্ন সভা সমিতির মঞ্চে তিনি গাইতেন- ‘কৃষক সমিতি বিনে গতি নাই/ সর্বহারা চাষীর দলে আয় সকলে মিশে যায়/কৃষক সমিতি বিনে গতি নাই/লাঙ্গল দিয়ে দেশের লোকের অন্ন যারা জোগায়, ২ টাকা সের দরে তারা চাউল কিনে খায়/আবার না খেয়ে বউ গলায় দড়ি দিয়ে মরে দেখি তাই/ কৃষক সমিতি বিনে গতি নাই। ভাইরে .. ।[ ৭০/৭১ এর সময় ২ টাকা সের চাউল মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ছিল]। শিক্ষার আলো বিস্তারের তাগিদে তিনি বাঘারপাড়ার মাঠ, খাজুরা স্কুল মাঠ, প্রভৃতি স্থানে আয়োজন করেছিলেন বইমেলার।

আঃ লতিফের বয়স যখন সবে মাত্র ২২, তখন থেকেই তিনি আত্মঅন্বেষনে হন্যে হয়ে উঠেন। এলাকার গুনী কবিয়াল মহেন্দ্রনাথ গোস্বামীর পরামর্শে চলে যান কুষ্টিয়ার ছেউড়ীতে। তিনি বাউলের প্রতি অত্যধিক আকৃষ্ট হলেন। যতদুর জানা যায় লালন শাহের একনিষ্ট ভক্ত ছিলেন ভোলা শাহ। আর ভোলা শাহের ভক্ত ছিলেন কুষ্টিয়ার ছেউড়ী গ্রামের কোকিল শাহ। ২২ বছরের আঃ লতিফ তখন কোকিল শাহের কাছে বাউল মন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে হয়ে গেলেন শাহ লতিফ আফি আনহু। এর পর বিভিন্ন এলাকায় তন্ন তন্ন করে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন বাউলের প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য। লালন শাহ্ধসঢ়; হয়ে উঠেছিলেন তার অনুসন্ধানের নায়ক। বাউল সাধনায় লালন গবেষক হিসাবে তিনি পেয়েছিলেন স্বীকৃতি। লালনের উপর অনেক অজানা তথ্য তিনি আবিস্কার করেন। অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের রচিত ‘বাউল সাহিত্য ও বাউল গান‘ নামক পুস্তকের একাংশের আলোচনা থেকে এ সব বিষয় জানা গেছে।
তিনি বাংলা একাডেমীর সংশ্লিষ্ট ছিলেন বল্ধেসঢ়;ও জানা যায়। ঐ সময় থেকেই তিনি বাউল গান রচনা ও বিভিন্ন ধর্মালোচনানুষ্ঠানে ভাব গান পরিবেশন শুরু করেছিলেন ।সব অনুষ্ঠানেই তিনি মরমী ভাবগানের জন্য আসরের শিরমনি হয়ে উঠতেন। এই সময় তিনি ‘পৃথিবী জীবন মন‘ নামক এক কাব্য রচনা করেন। তাতে তিনি মানুষকে সর্বোপরি স্থান দিয়ে মানুষের সেবাই সকল ধর্মের মুল লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি লিখেছেন-পুজিঁয়া নয়নজলে মানুষের মহাচরণ/ সকলের বিলাইয়া আপন অহম/ সবাকার মাঝে তুমি আপনারে/ খুজেঁ দেখ ভাই। ঐ সময়কালের রচিত তার এক মরমী গান-‘দয়াল কার ছায়ায় দাঁড়াবো বল‘/তোমা বিনে এভুবনে দুঃখ কাহারে জানাবো বল‘। গানটি জননন্দিত হয়ে উঠেছিল। এই গানটি বাংলাদেশ বেতার খুলনার বিভিন্ন সঙ্গীত অনুষ্ঠানে প্রায় শোনা যায়। সব থেকে বেশী সমাদৃত হয়েছিল ঐ সময় তার প্রকাশিত ‘গন সঙ্গীত‘ নামক পুস্তিকাটি। পুস্তিকাটি গনজাগরণে যথেষ্ট ভুমিকা রেখেছিল।

হোমিওপ্যাথিক, প্রাকৃতিক ও তান্ত্রিক চিকিৎসাবিদ হিসাবে ডাঃ শাহ লতিফ আফি আনহুর অবদানও কম ছিল না। রোগ নির্নয়ে বিচক্ষনতার পরিচয়ই ছিল তার চিকিৎসা বিষয়ক সাফল্য। যে কোন ব্যাধি নিরাময়ে তার যশের কথা এলাকাবাসী আজ্ধসঢ়;ও স্বরণ করে চলে। ষাটের দশকে তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষনায় আত্মনিয়োগ করেন। ঐ সময় চট্টগ্রাম থেকে অমল চন্দ্র সেনের সম্পাদনায় ‘শাশ্বতী‘ নামক চিকিৎসা বিষয়ক পত্রিকা প্রকাশিত হতো। এই পত্রিকাটিতে ডাঃ লতিফ শাহের বেশ কিছু গবেষনা মুলক প্রবন্ধ প্রকাশ হয়। এছাড়া রুগ্নার্থের মুক্তি মানসে হোমিও বিজ্ঞান ও আদর্শের প্রসারে নিবেদিত হোমিওপ্যাথদের সহযোগীতায় ঐ সময় চট্টগ্রাম থেকে ‘সমবিধান‘ নামক পত্রিকাটি প্রকাশিত হতে থাকে।এই পত্রিকাটিতে ‘মহাজীবনের ক্রমবির্বতনের উপর প্রাচীন দোষের প্রভাব‘, জীবনীশক্তির অসুস্খতারি কারনসমূহ‘, ‘হোমিও প্যাথির অন্তরায়‘, ‘যথাবিষমঃ তথৌষধিঃ‘, হোমিও প্যাথিতে ডাঃ
শচীমোহনের অবদান‘সহ বিভিন্ন গবেষনামুলক প্রবন্ধ তিনি ধারাবাহিকভাবে লিখেছেন।

মানবদরদী শাহ লতিফ আফি আনহু ১৯৫৯ সাল থেকে স্থানীয় শালিখার শতখালী ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এলাকাবাসীর কাছে তিনি ঐ সময় অত্যধিক শ্রোদ্ধার পাত্র হন। ঐ সময় তিনিই ছিলেন অত্র অঞ্চলের সমাজতন্ত্রের অগ্রনায়ক। সদা সর্বদা তিনি কাউন্সিলের সেক্রেটারী বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্যকে সঙ্গে করে চলতেন। যশোরের খড়কি শহরে হক সাহেবের বাসায় অনেকদিন বৈদ্যনাথ বাবুকে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণর বিষয় লিখিয়ে দিয়ে আসতেন। হক সাহেব ছিলেন তার রাজনৈতিক গুরু। হটাৎ দেশে সামপ্রদায়িক গোলমাল শুরু হয়। আশ্বস্ত করতে থাকেন সকল অপশক্তিকে। তিনি সকলকে সাম্য ও সম্প্রীতির গান শোনাতেন।
সংখ্যালঘুদের সহযোগীতার কারণে পাকিস্তান শাষক গোষ্ঠির কুনজরে পড়েন। তার বিরুদ্ধে ডিআইবি মামলা দায়ের হয়। কিছুদিন কারাবরনও করেন। ঐ সময় তিনি তার বিশ্বস্ত এক সঙ্গী কাতলী গ্রমের ইউসুফ সরদারের উপর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব অর্পন করেন।

১৯৬৫ সালের কথা। তৎকালীন ঢাকা মিঊজিয়ামের অধ্যক্ষ ড. ইনামুল হক তাকে শিল্প সংগ্রাহক হিসাবে নিয়োগদান করেন। ঐ সময় তিনি বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পী কামরুল হাসান ও আসাফ-উদ-দৌলার সঙ্গে বেশ কিছুকাল কর্মব্যস্ত থাকেন। দেশের প্রাচীন লুপ্ত প্রায় শিল্প কর্ম সংগ্রহকালে তিনি ইতিহাসের নিদর্শন প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক গবেষনা ঝুঁকে পড়েন। এসময় তিনি লিখেছিলেন ‘সিন্ধু তীরের ক্ষতি‘ নামক বিশাল এক কবিতা। প্রাচীন ইতিহাসের অনেক অজানা বিষয় এ কবিতায় ফুটে উঠে। ঐ সময় কবিতা রচনার পাশাপাশি তিনি দেশাত্মবোধক, ভাটিয়ালী, মুর্শিদী,ভাওয়াইয়া,বাউল সঙ্গীত রচনা করতে থাকেন। ঢাকা থেকে তখন গ্রামোফোন রেকর্ডে আঃ লতিফের অনেক দেশাত্মবোধক,ভাটিয়ালী,পল্লীগীতি গান রেকর্ড হয়ে গ্রামে গঞ্জে পৌছে যেত। তখন এলাকায় মরমী বাউল সাধক শিল্পী শাহ লতিফ আফি আনহুর গানের যেন এক প্লাবন বয়ে যেত।

২০১২ সালের ৯,১০ও ১১ই মার্চ খাজুরা এম এন মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে “গাইদঘাট কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্র“ আয়োজিত গ্রামীন জীবনযাত্রা ও কৃষি প্রযুক্তি তথ্য,বীজ মেলার অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে দেশ তথা অত্র অঞ্চলের ৩০ জন গুনীজনের সম্মাননা প্রদান করা হয়। মরনোত্তর গুনীজন সম্মাননার মধ্যে এই মরমী বাউল সাধক কবি ও শিল্পী শাহ লতিফ আফি আনহু ছিলেন অন্যতম একজন।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews