1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
কৃষি বিষয়ক সাংবাদিকতায় সারাদেশেই সাড়া জাগান ফকরে আলম  - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
একই দিনে দুই মহাদেশে শানাকার ঝড় তালেবান মন্ত্রীর দেশত্যাগ, নারী শিক্ষা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে শ্বাস নেওয়া দায়, বায়ুদূষণে ফের শীর্ষে ঢাকা দেবহাটা উৎসবমুখর পরিবেশে সরস্বতী পূজা পালিত শফিকুল আলমের শাস্তি দাবি: মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সরব প্রতিবাদ গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু, হামাসের প্রস্তুতি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণায় শ্যামনগরে আনন্দ মিছিল কুড়িগ্রামে হত্যা মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা সাজু গ্রেফতার জেপিসি কমিটির বিরুদ্ধে মুসলিমসহ ভিন্নমত দমনের অভিযোগ মহাকুম্ভে পুণ্যার্থীদের জন্য মসজিদ-মাদ্রাসা ও ইমামবাড়ীর দরজা খুলে দিলেন মুসলিমরা

কৃষি বিষয়ক সাংবাদিকতায় সারাদেশেই সাড়া জাগান ফকরে আলম 

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪
  • ৯১ জন খবরটি পড়েছেন

                                       

         ।। লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডল।। 

ফখরে আলম ১৯৬১ সালের ২১ জুন যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা শামসুল হুদা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। ১৯৭৭ সালে যশোর জেলা স্কুল থেকে এসএসসি ১৯৭৯ সালে সরকারি এম এম কলেজ থেকে এইচএসসি ১৯৮১ সালে ঐ কলেজ থেকে বিকম পাশ করেন। ১৯৮৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

ছাত্রজীবনেই তিনি সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৮২ সালে সাপ্তাহিক রোববার পত্রিকায় প্রতিবেদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯১ সালে দৈনিক আজকের কাগজের যশোর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়ে পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকে বেছে নেন। এরপর দৈনিক জনকণ্ঠ, দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক যায়যায় দিন ও দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ১৯৯২ সাল থেকে স্টাফ রিপোর্টার, সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ফখরে আলম দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে কাজ করেছেন। গড়ে প্রতিমাসে তার ৩০টির বেশি নিজস্ব প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।

কৃষি বিষয়ক সাংবাদিকতায় ফখরে আলম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভ্থমিকা রেখেছিলেন। তিনি দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ধান, ফুল, ফল, মাছ চাষ নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেছেন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মহেশ্বরচান্দা গ্রাম ও কৃষি বিপ্লবের নায়ক ওমর আলীকে নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লিখে দেশ জুড়ে সাড়া জাগিয়েছেন। তিনি গাইদঘাট কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্র বিষমুক্ত সবজি চাষ, কৃষক সংকঠক আইয়ুব হোসেন, সহযোগী সংগঠক সাংবাদিক লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডলকে নিয়ে কাজ করেছেন। এই অঞ্চলের কৃষির সম্ভাবনা তার খবরের অন্যতম উপাদান। কৃষি বিষয়ক সাংবাদিকতায় তিনি ১৯৯৮ সালে বার্ক এর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। একই বছর তিনি কৃষি বিষয়ক সাংবাদিকতায় বিসিডিজেসি ও নোভার্টিজ এর ফেলোশিপ অর্জন করেন।

ফখরে আলম একজন কবি। স্কুল জীবন থেকেই তিনি কবিতা লিখেছেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব পত্র-পত্রিকায় তার কবিতা ছাপা হয়েছে। বাংলা একাডেমির উত্তরাধিকার ও পশ্চিমবঙ্গের শিব নারায়ণ রায় সম্পাদিত জিজ্ঞাসা পত্রিকায় তার কবিতা স্থান পেয়েছে। ১৯৮০-৮১ সালে ফখরে আলম যশোর সরকারি এমএম কলেজের ছাত্র সংসদের সাহিত্য সম্পাদক নিবার্চিত হন। তিনি কলেজ বার্ষিকী সম্পাদনা করেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তার কবিতা দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তিনি ১৯৯১ সালে যশোর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকার সময় দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান কবি, সাহিত্যিকদের নিয়ে একটি সাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন করেন। এরপর ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি যশোর সাহিত্য পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

ফখরে আলম সাংবাদিকতা ও বৃক্ষ রোপনে দেশ বিদেশের অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৯৭ সালে মোনাজাত উদ্দিন স্মৃতি পুরস্কার, একই বছর এফপিএবি পুরস্কার, ২০০০ সালে মধুসূদন একাডেমি পুরস্কার, ঐ বছরই বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবদিক ফোরাম পুরস্কার, ২০০২ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ পুরস্কারসহ আরও কয়েকটি পুরস্কার অর্জন করেন। বৃক্ষ রোপনে গুরুত্বপূর্ণ ভ্থমিকার জন্য ফখরে আলম ২০০৬ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় পুরস্কার, ২০০৭ সালে প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি যশোরে অনুষ্ঠিত বৃক্ষ মেলায় প্রথম হয়েছেন। তার নিজস্ব একটি ভিন্ন ধরনের গাছের যাদুঘর ছিল। তিনি বিভিন্ন কবরস্থান, বসতবাড়ির আঙ্গিনা, রাস্তার দুই ধারে বৃক্ষ রোপন করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

ফখরে আলমের ১৩টি গ্রন্থ রয়েছে। ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত- ডাকে প্রেম তুষার চুম্বন, তুই কনেরে পাতাসী, ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত ‘খুলে ফেলি নক্ষত্রের ছিপি‘ নামে তিনটি কাব্যগ্রন্থ রয়েছে। এছাড়া শালপ্রাংশু (সম্পাদনা গ্রন্থ), এসএম সুলতান, দক্ষিণের জনপদ, আলোকিত নারী আঞ্জেলা গমেজ, দক্ষিণের মুক্তিযুদ্ধ, একজনই শরীফ হোসেন, রিপোর্টারের ডায়েরি, জানা অজানা রবীন্দ্রনাথ, হাতের মুঠোয় সাংবাদিকতা নামের কয়েকটি ভিন্ন ধরনের গ্রন্থ রয়েছে।

ফখরে আলম যশোরের চাঁচড়া কমিউনিটি ক্লিনিক ও কবরস্থানের প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়া তিনি যশোর ইনস্টিটিউট, যশোর সাহিত্য পরিষদ, আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম যশোরের আজীবন সদস্য। তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলন পরিষদসহ আরও কয়েকটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেছেন। সাহসী যোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, মুজিব নগর ইনফরমার, বধ্যভ্থমিসহ মুক্তিযুদ্ধের বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লিখেছেন। যশোরের চাঁচড়া শংকরপুর এলাকার বধ্যভ্থমির স্মৃতি স্তম্ভ নিমার্ণে তার গুরত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ফখরে আলম এক ছেলে এক মেয়ের বাবা।  তিনি আমৃত্যু যশোর শহরের চাঁচড়া এলাকায় বসবাস করেছেন। ফখরে আলম বেশ কিছুদিন ক্যান্সার রোগে ভুগার পর ২০২০ সালের ১৪ মে যশোর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যু বরন করেন। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।

২০১২ সালের ৯,১০ও ১১ই মার্চ খাজুরা এম এন মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে “গাইদঘাট কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্র“ আয়োজিত গ্রামীন জীবনযাত্রা ও  কৃষি প্রযুক্তি তথ্য,বীজ মেলার অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে দেশ তথা অত্র অঞ্চলের ৩০ জন গুনীজনের সম্মাননা প্রদান করা হয়। ্ওই সময় জীবদ্দশায় গুনীজন সম্মাননার মধ্যে বরেণ্য চারণ সাংবাদিক ফখরে আলম ছিলেন অন্যতম একজন।





শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews