শেখ মাহবুবুর রহমান সুমন, কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) থেকে।
কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের আদুয়াখালি খাল দখল করে ভোগ করছে স্থানীয় প্রভাবশালী আঃ মাজেদ ঢালী। এর প্রভাব পড়ছে খাল পাড়ের কৃষি ফসলে, সেচ পানির অভাবে হুমকির মুখে প্রায় ১০ একর জমির বিভিন্ন প্রকার ফসল।
কৃষক পরিমল হালদার,মাসুম বিল্লাহ,মামুন খা,ইউনুস খা বলেন দীর্ঘকাল যাবৎ এই খালটিতে বর্যা মৌসুমের ধরে রাখা পানি, সেচ দিয়ে তারা বিভিন্ন ফসল আবাদ করে আসছে। স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল মাজেদ ঢালী সাম্প্রতিক সময়ে খালটি দখল করে স্থানীয় কৃষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে খালটির পশ্চিম পাশের অন্য একটি খাল থেকে জোয়ার ভাটার স্রোত যুক্ত লবন পানি উঠিয়ে দেওয়ায় মজুদকৃত খালের পানি লবণাক্ত হয়ে কৃষি ফসলে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন ও কৃষ্ণনগর ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য নূর হোসেন জানান আদুয়াখাল থেকে স্থানীয় কৃষকরা তাদের ফসলের প্রয়োজনীয় পানি সেচের মাধ্যমে দিয়ে থাকেন কিন্তু সেখানে লবন পানির মিশ্রণের কারণে কৃষকদের ফসল উৎপাদন হুমকির মুখে। খালের দু-পারে প্রায় ১০ একর জমির ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার ফসল ক্ষতির সম্মুখিন হবে এই লবণ পানির প্রভাবে।
অথ্য অনুষন্ধানে জানা যায় শাহাপুর ও কৃষ্ণনগর মৌজার আদুয়াখালি খালের ৮.৫ একর খাস খালের মধ্য দক্ষিন দিকের শাহাপুর মৌজার ১ থেকে ২ একর জায়গা স্থানীয় প্রভাব শালী আব্দুল মাজেদ ঢালী প্রভাব খাটিয়ে ভোগ দখল করে আসছে। যে স্থান থেকে মুলত সাধারণ কৃষকরা সেচের পানি দিয়ে চাষাবাদ করে থাকে।
খাস খালটি ১৯৭৯ সালে বন্দবস্ত পায় মানপুর গ্রামের সোবহান ও মুকুন্দপুরের শহর আলী। ১৯৮৪ সালে সোবহান,শহর আলী দখলে আসলে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ১৯৯৪ সালে মামলার রায়ে জনস্বার্থে পুনরায় খালটি খাস খতিয়ানভুক্ত করে। পরবর্তীতে সোবহান,শহর রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক আপিল করলেও দীর্ঘ শুনানি শেষে সকল আপিল না মঞ্জুর করে, জনস্বার্থে খালটি খাস খতিয়ানভূক্তই রাখে আদালত।
খাস জায়গা দখল ও লবণ পানি উঠানোর বিষয়ে দখলদার আঃ মাজেদ ঢালীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান আমি দীর্ঘদিন যাবত এই যায়গাটি ভোগ দখল করে আসছি এখানে অল্পকিছু খাস যায়গা রয়েছে সেটি বাবদ শহিদ মাদানী জামে মসজিদে প্রতি বছরে ৫০০০ টাকা করে দিয়ে থাকি। লবণ পানি উঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন।
খাস খাল দখলের বিষয়ে জয়পত্রকাটি ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা, জালাল উদ্দিন আহম্মেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন দখলের বিষয়টি আমার জানা নেই, যদি কেউ অবৈধ ভাবে দখল করে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। জন সাধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাস খালটি দখলমুক্ত করে উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় কৃষকরা সহ সচেতন মহল।