শ্রমিকদেরকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার অন্যায় নোবেল পুরস্কার দিয়ে ঢাকা যাবে না। মামলা শ্রমিকরা করছে। তারা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সুতরাং তারা ক্ষুব্ধ হতেই পারে। এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা শ্রমিক ঠকানোর মামলা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের করা ‘বিচার বিভাগীয় হয়রানি’ ধরনের মন্তব্যের প্রতিবাদে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, শ্রমিকরা যে দাবি তুলেছে সেটি আদালত বিচার করবেন যে, তাদের দাবি কতটা যৌক্তিক। আদালত সে অনুযায়ী রায় দেবেন।

অপরদিকে, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের এমন মন্তব্যকে একটি রাষ্ট্রের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ও সার্বভৌমত্বের ওপর অসম্মান প্রদর্শন বলেও মন্তব্য করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।
এর আগে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক ড. ইউনূসের বিরূদ্ধে করা মামলার নিন্দা জানিয়েছেন। চলমান শ্রমিক ঠকানোর মামলাকে বিচার বিভাগীয় হয়রানি বলে মনে করেন তিনি।

ভলকার তুর্কের এমন মন্তব্যকে একটি রাষ্ট্রের বিচার বিভাগে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ বলেও মন্তব্য করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, এতে করে একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ওপর অসম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি অধিকারবঞ্চিত শ্রমিকদের মানবাধিকার ক্ষুণ্ন করার বিষয়টিকে জাতিসংঘ প্রশ্রয় দিয়েছে।

মিজানুর রহমান বলেন, হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের নাম করে যে বক্তব্যটি এসেছে, সেটা খুবই দুঃখজনক। কেননা একটি রাষ্ট্রে যখন বিচার প্রক্রিয়া চলছে, তখন আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থার এমন মন্তব্য বিচার প্রক্রিয়ার ওপর একটা অনভিপ্রেত হস্তক্ষেপ, নাক গলানো। যা আন্তর্জাতিক আইনেও স্বীকৃত না।

শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার মত অপরাধকে সুশীলরা শুধু একটি নোবেল পুরস্কার দিয়ে ঢেকে দেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মিজানুর রহমান আরও বলেন, যখন শ্রমীকরা মামলা করছে, তারা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সুতরাং তারা ক্ষুব্ধ হতেই পারে। সেখানে আদালত বিচার করবেন, তাদের দাবি কতটা যৌক্তিক। আদালত সে অনুযায়ী রায় দেবেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, নোবেল পুরস্কার বা আন্তর্জাতিক কোনো পুরস্কার পাওয়া মানে কি আমি সবকিছুর উর্ধ্বে উঠে গেলাম?

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আদালতে বিচারাধীন গ্রামীণ টেলিকমের কর্মী ঠকানোর মামলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করে বিবৃতি দেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওমাবাসহ দেশি-বিদেশি সুশীলরা। মূলত ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়ার ওপর পরোক্ষে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যেই সুশীলসমাজ ও বিদেশী জনসংযোগ কোম্পানিগুলোকে ব্যবহার করে ইউনূস সেন্টার এমনটা করেছে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, ড. ইউনূসের বিচার স্থগিতের দাবির নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ১৯৮ জন বাংলাদেশি। এর আগে ড. ইউনূসকে নিয়ে বিদেশি সুশীলদের বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন দেশের ৫০ জন সম্পাদক। সুত্র-সময় নিউজ