নড়াইল, ২৩ অক্টোবর: নড়াইল সদর উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম গতকাল বুধবার রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক তরিকুল ইসলাম বর্তমানে গা ঢাকা দিয়েছেন এবং তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, চলতি মাসের ১৫ তারিখ বিকেলে স্কুলের ছুটির পর তরিকুল ইসলাম কয়েকজন শিক্ষার্থীকে একটি কক্ষে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন। সেই সময় একটি শিশুকে বাইরে পাঠানো হয় এবং অন্য দুজনকে জাতীয় পতাকা খোলার জন্য পাঠানো হলে কক্ষের ভেতরে মেয়েটি একা হয়ে পড়ে। এই সুযোগে শিক্ষক তরিকুল কক্ষের দরজা বন্ধ করে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। শিশুর চিৎকার শুনে অন্য সহপাঠীরা দরজা ধাক্কা দিয়ে খুললে শিক্ষক তাকে ছেড়ে দেন।
পরিবার প্রাথমিকভাবে ‘সম্মানহানির ভয়ে’ বিষয়টি গোপন রাখলেও ঘটনার তিন দিন পর পরিবারের পুরুষ সদস্যরা জানতে পারেন। এরপর শিক্ষক তরিকুল ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় পর্যায়ে তদবির শুরু করলে গত মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় মামলা করা হয়।
এদিকে, গত মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষক তরিকুল ইসলামের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মানববন্ধনে অভিভাবকেরা প্রশ্ন তোলেন, “শিশুরা তাহলে কার কাছে নিরাপদ? কোন ভরসায় তাদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন অভিভাবকেরা?”
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষক তরিকুল ইসলাম সাত দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। যদিও তিনি মামলা হওয়ার আগে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এটিকে ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেছিলেন, তবে মামলা দায়েরের পর থেকেই তিনি পলাতক। নড়াইল সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্ত চলছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে।